কোলেস্টেরল বাড়ার কারণ অনেক। আমাদের অনেকের ভুল ধারণা এই যে, কোলেস্টরল মানেই ক্ষতিকর। অথচ আমদের দেহের বিভিন্ন প্রাত্যহিক জৈবিক কার্যপ্রণালির জন্য উপযুক্ত পরিমাণে কোলেস্টরল জরুরি।
কোলেস্টেরল জিনিসটা আসলে কি ?
কোলেস্টরল হচ্ছে লিভার থেকে নির্গত এক ধরনের চর্বিযুক্ত মোমের মতো ঝিল্লি জাতীয় তরল পদার্থ। এটি পানিতে দ্রবণীয় নয়। কোলেস্টরল সাধারণত চর্বি (যা Lipid নামে পরিচিত) এবং প্রোটিনের সঙ্গে জুড়ে থাকে যাকে একসঙ্গে লিপোপ্রোটিন বলে।
রক্তের মধ্যে প্রোটিনের (Lipoprotein) সঙ্গে কোলেস্টরল চলাচল করে। ভাল কোলেস্টরল (High Density Lipoprotein- HDL) হার্টের সুরক্ষায় কাজ করে, যেখানে অতিরিক্ত খারাপ কোলেস্টরল (Low Density Lipoprotein- LDL এবং Very Low Density Lipoprotein– VLDL) হৃদরোগের আশঙ্কা বাড়ায়। শরীরের খারাপ কোলেস্টরল অতিরিক্ত থাকলে বুকে ব্যাথা বা Angina, হৃদরোগের আক্রমণ, স্ট্রোক এবং বহুমূত্র বা ডায়াবেটিকস রোগ হতে পারে।
কোলেস্টরল যখন ক্ষতির কারণ
রক্তে যখন উচ্চ মাত্রার খারাপ কোলেস্টরল (HDL) এর পরিমাণ বেড়ে যায় তখন তা রক্তনালিতে জমাট বাঁধে ও রক্তনালি সংকুচিত করতে থাকে । রক্তনালির একটি নির্দিষ্ট ব্যাস বা Diameter রয়েছে। যখন খারাপ কোলেস্টরল রক্তনালিতে জমা হতে থাকে তখন রক্তনালির এই ব্যাস ক্রমশ: সংকুচিত হয়ে যায় এবং রক্তনালি ব্লক হওয়ার ঝুঁকি অনেকখানি বেড়ে যায়। আমরা জানি রক্তনালির মধ্য দিয়ে রক্ত চলাচল করে। আর এই রক্তের মাধ্যমে দেহ আমাদের টিস্যুতে অক্সিজেন ও খাবার পরিবহন করে। রক্তনালিতে কোলেস্টরল জমাট বাঁধলে স্বাভাবিকভাবে যে পরিমাণ রক্ত সঞ্চালিত হবার কথা, সে পরিমাণ রক্ত চলাচল করতে পারে না। এভাবে হার্টের রক্তনালিতে কোলেস্টেরল জমা হলে হার্টের ব্লক হয়ে যায় এবং হার্ট এ্যাটাকের কারণ হয়। তদ্রুপভাবে মস্তিষ্কের রক্তনালি ব্লক হলে স্ট্রোক এর মতো ঘটনা ঘটতে পার।
আজকাল অনেকেই কোলেস্টেরলের সমস্যায় ভুগে থাকেন। বেশি বয়সে তো বটেই অনেক কম বয়সেও কোলেস্টেরলের সমস্যা দেখা দিতে পারে। শরীরে কোলেস্টেরলের পরিমান বৃদ্ধি পায় মূলত খাদ্যাভ্যাস ও অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপনের কারণে। সচেতন থাকলে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রার বৃদ্ধি রোধ করা সম্ভব।