মহাকাশ নিয়ে ১০টি মজার ও বিস্ময়কর তথ্য
মহাকাশ- অসীম রহস্য আর বিস্ময়ের এক অনন্ত আধার। আকাশের রহস্যঘেরা তারা, চাঁদ, সূর্য- এসব আমাদের মুগ্ধ করেছে প্রাচীনকাল থেকেই। মহাকাশ শুধু জটিল গবেষণা বা আবিষ্কারের জন্য নয়, এর মধ্যে অনেক মজার বিষয়ও রয়েছে। মহাকাশ বিজ্ঞানে এমন অনেক বিষয় রয়েছে যা রোমাঞ্চকর, মজার, এবং কল্পনার চেয়েও বিস্ময়কর।
মহাকাশ নিয়ে তেমনি ১০টি মজার ও বিস্ময়কর তথ্য নিচে তুলে ধরা হলো-
১. মহাকাশে ভাসমান জীবন
মহাকাশে মাধ্যাকর্ষণ প্রায় শূন্য, যা শূন্য মাধ্যাকর্ষণ বা ‘জিরো গ্র্যাভিটি’ নামে পরিচিত। মাধ্যাকর্ষণ না থাকায় সবকিছু ভাসতে থাকে- খাবার, পানি, এমনকি মানুষও। মহাকাশে ভাসমান থাকা একজন নভোচারীর জন্য সাধারণ কাজ, যেমন- খাবার খাওয়া বা ঘুমানো, খুব মজার হয়ে ওঠে। তারা গ্লাস থেকে পানি খাওয়ার বদলে ছোট প্যাকেট থেকে পানি টেনে খায়! মহাকাশে গ্যাস বের হতে পারে না, তাই সোডা পান করা যায় না!

২. সূর্য প্রতি সেকেন্ডে প্রচুর শক্তি তৈরি করে
সূর্য প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৬০ কোটি টন হাইড্রোজেন গ্যাস পোড়ায়। এটি বিশাল পরিমাণ শক্তি তৈরি করে, যা আমাদের আলো ও তাপ দেয়।
৩. নক্ষত্রেরা গান গায়!
বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন, নক্ষত্রেরা শব্দের মতো কম্পন তৈরি করে। যদিও এগুলো আমাদের কানে শোনা যায় না, কিন্তু গবেষকরা এগুলোকে মিউজিক্যাল সুরে পরিণত করতে পেরেছেন। মহাবিশ্ব বায়ুশূন্য হলেও শব্দ তড়িতচুম্বকীয় কম্পনের রূপে মহাবিশ্বে থাকে। নাসার নানান আধুনিক যন্ত্রপাতি সেই তড়িতচৌম্বক কম্পন (electromagnetic vibration) কে আমাদের শোনার মতো করে রূপান্তরিত করতে পারে। আর প্রতিটি গ্রহ বা নক্ষত্র থেকে উৎপন্ন শব্দও কিন্তু ভিন্ন ও বিচিত্র ধরণের হয়ে থাকে।
সভ্যতার শুরু থেকেই মানুষ মহাকাশের রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করেছ চলেছে। সময়ের সাথে সাথে বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে মহাকাশ গবেষণা এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন করেছে। আজ আমরা জানি, মহাবিশ্ব¦ এক বিশাল রহস্যময় জগত, যার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পৌঁছানোর চিন্তাও যেন কল্পনার অতীত। তাই মহাকাশ গবেষণাকে বলা হয় অসীমের বিজ্ঞান।
৪. নক্ষত্রের জন্ম ও মৃত্যু
মহাকাশে নক্ষত্রেরা জন্ম নেয় ধূলিকণা ও গ্যাস থেকে, যা ‘নেবুলা’ নামে পরিচিত। যখন একটি নক্ষত্র মারা যায়, তখন এটি ব্ল্যাক হোল বা সুপারনোভায় পরিণত হতে পারে, যা দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি রহস্যময়।
৫. মহাকাশে মানুষের উচ্চতা বাড়ে
মহাকাশে থাকার সময় মাধ্যাকর্ষণের অভাবে মানুষের মেরুদন্ড প্রসারিত হয়, ফলে উচ্চতা কিছুটা বেড়ে যায়! দীর্ঘদিন মহাকাশে অবস্থান করা মহাকাশচারীদের উচ্চতা মেতে এমন প্রমাণ পাওয়া গেছে।
৬. মহাকাশের সুবাস
নভোচারীদের মতে, মহাকাশের সুবাস বারবিকিউ বা পোড়া ধাতুর মতো। অনেকটা ওয়েল্ডিঙের কাজের সময় এর আশেপাশে থাকলে যে ঘ্রাণ পাওয়া যায়, মহাশূন্য বা স্পেসের গন্ধটা ঠিক তেমন।
৭. মহাকাশে চিৎকার করলেও কেউ শুনতে পাবে না
মহাকাশে বায়ু নেই, তাই সেখানে কোনো শব্দ পৌঁছাতে পারে না। কারণ শব্দের জন্য বায়ু বা মাধ্যম দরকার হয়। ফলে মহাকাশে কোনো বিস্ফোরণ, ধূমকেতু বা অন্যান্য ঘটনা ঘটলেও, তার কোনো শব্দ শোনা যায় না! এমনকি মহাকাশে চিৎকার করলেও তা শোনা যায় না। তাই মহাকাশ জুড়ে আছে অদ্ভুত শূন্যতা। মহাকাশচারীরা পরস্পরের সাথে যোগাযোগ করতে রেডিও তরঙ্গ ব্যবহার করেন।
৮. চাঁদের মাটিতে পায়ের ছাপ হাজার বছর ধরে থাকে
চাঁদে বাতাস বা পানি না থাকায় সেখানে পায়ের ছাপ একবার পড়লে তা কয়েক হাজার বছর ধরে অপরিবর্তিত থাকে। অ্যাপোলো-১১ মহাকাশচারী নীল আর্মস্ট্রং ২০ জুলাই, ১৯৬৯ সালে চাঁদে প্রথম হাটার একটি ছবি তুলেছিলেন। ধারণা করা হয়, কমপক্ষে ১০০ মিলিয়ন বছর সেখানে তার পায়ের ছাপ থাকবে।
